Add parallel Print Page Options

কুমারী মরিয়ম

26-27 ইলীশাবেৎ যখন ছমাসের গর্ভবতী, তখন ঈশ্বর গাব্রিয়েল, স্বর্গদূতকে গালীলে নাসরৎ নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন। এই কুমারী ছিলেন যোষেফ নামে এক ব্যক্তির বাগদত্তা। যোষেফ ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, আর যে কুমারীর কাছে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তাঁর নাম মরিয়ম। 28 গাব্রিয়েল মরিয়মের কাছে এসে বললেন, “তোমার মঙ্গল হোক্! প্রভু তোমার প্রতি মুখ তুলে চেয়েছেন, তিনি তোমার সঙ্গে আছেন।”

29 এই কথা শুনে মরিয়ম খুবই বিচলিত ও অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন, “এ কেমন শুভেচ্ছা?”

30 স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম তুমি ভয় পেও না, কারণ ঈশ্বর তোমার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। 31 শোন! তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার এক পুত্র সন্তান হবে। তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু। 32 তিনি হবেন মহান, তাঁকে পরমেশ্বরের পুত্র বলা হবে, আর প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতৃপুরুষ রাজা দায়ূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন। 33 তিনি যাকোবের বংশের লোকদের ওপরে চিরকাল রাজত্ব করবেন, তাঁর রাজত্বের কখনও শেষ হবে না।”

34 তখন মরিয়ম স্বর্গদূতকে বললেন, “কেমন করে সম্ভব? কারণ আমি তো কুমারী!”

35 এর উত্তরে স্বর্গদূত বললেন, “পবিত্র আত্মা[a] তোমার ওপর অধিষ্ঠান করবেন আর পরমেশ্বরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে; তাই যে পবিত্র শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে তাঁকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে। 36 আর শোন, তোমার আত্মীয়া ইলীশাবেৎ যদিও এখন অনেক বৃদ্ধা তবু সে গর্ভে পুত্রসন্তান ধারণ করছে। এই স্ত্রীলোকের বিষয়ে লোকে বলত যে তার কোন সন্তান হবে না, কিন্তু সে এখন ছমাসের গর্ভবতী। 37 কারণ ঈশ্বরের পক্ষে কোন কিছুই অসাধ্য নয়!”

38 মরিয়ম বললেন, “আমি প্রভুর দাসী। আপনি যা বলেছেন আমার জীবনে তাই হোক্!” এরপর স্বর্গদূত মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।

সখরিয় ও ইলীশাবেতের সঙ্গে মরিয়মের সাক্ষাৎ

39 তখন মরিয়ম উঠে তাড়াতাড়ি করে যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলের একটি নগরে গেলেন। 40 সেখানে সখরিয়র বাড়িতে গিয়ে ইলীশাবেতকে অভিবাদন জানালেন। 41 ইলীশাবেৎ যখন মরিয়মের সেই অভিবাদন শুনলেন, তখনই তাঁর গর্ভের সন্তানটি আনন্দে নেচে উঠল; আর ইলীশাবেৎ পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন।

42 এরপর তিনি খুব জোরে জোরে বলতে লাগলেন, “সমস্ত স্ত্রীলোকের মধ্যে তুমি ধন্যা, আর তোমার গর্ভে যে সন্তান আছেন তিনি ধন্য। 43 কিন্তু আমার প্রভুর মা যে আমার কাছে এসেছেন, এমন সৌভাগ্য আমার কি করে হল? 44 কারণ যে মুহূর্তে তোমার কন্ঠস্বর আমি শুনলাম, আমার গর্ভের শিশুটি তখনই নড়ে উঠল। 45 আর তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ যে প্রভু তোমায় যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে।”

মরিয়ম ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন

46 তখন মরিয়ম বললেন,

47 “আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা করছে,
    আর আমার আত্মা আমার ত্রাণকর্তা ঈশ্বরকে পেয়ে আনন্দিত।
48 কারণ তাঁর এই তুচ্ছ দাসীর দিকে
    তিনি মুখ তুলে চেয়েছেন।
হ্যাঁ, এখন থেকে সকলেই
    আমাকে ধন্যা বলবে।
49 কারণ সেই একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবনে কত না মহত্ কাজ করেছেন।
    পবিত্র তাঁর নাম।
50 আর যাঁরা বংশানুক্রমে তাঁর উপাসনা করে
    তিনি তাদের দয়া করেন।
51 তাঁর বাহুর যে পরাক্রম, তা তিনি দেখিয়েছেন।
    যাদের মন অহঙ্কার ও দম্ভপূর্ণ চিন্তায় ভরা, তাদের তিনি ছিন্নভিন্ন করে দেন।
52 তিনিই শাসকদের সিংহাসনচ্যুত করেন,
    যারা নতনম্র তাদের উন্নত করেন।
53 ক্ষুধার্তকে তিনি উত্তম দ্রব্য দিয়ে তৃপ্ত করেন;
    আর বিত্তবানকে নিঃস্ব করে বিদায় করেন।
54 তিনি তাঁর দাস ইস্রায়েলকে সাহায্য করতে এসেছেন।
55 যেমন তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তেমনই করবেন।
    অব্রাহাম ও তাঁর বংশের লোকদের চিরকাল দয়া করার কথা তিনি মনে রেখেছেন।”

56 ইলীশাবেতের ঘরে মরিয়ম প্রায় তিন মাস থাকলেন। পরে তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন।

Read full chapter

Footnotes

  1. 1:35 পবিত্র আত্মা যাঁকে ঈশ্বরের আত্মা, খ্রীষ্টের আত্মা ও সহায়ক বলা হয়ে থাকে।