Add parallel Print Page Options

আমি চাই, তোমরা জান যে তোমাদের সাহায্য করার জন্য আমি কতো কঠোর পরিশ্রম করছি। লায়দিকেয়ার লোকদের ও আরো অনেকের জন্যও পরিশ্রম করছি, যাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ বা পরিচয় হয় নি। আমি চাই তারা ও তোমরা যেন শক্তিশালী হয়ে ওঠো! এবং যেন পরস্পর ভালবাসার বন্ধনে বাঁধা থাকো; আর সুবিবেচনার মধ্য দিয়ে যে দৃঢ় বিশ্বাস আসে তাতে সমৃদ্ধ হও। আমি চাই তোমরা ঈশ্বরের নিগূঢ় সত্য পূর্ণরূপে জানো। ঈশ্বর যা প্রকাশ করেছেন সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট নিজে। খ্রীষ্টের মধ্যেই নিশ্চিতরূপে সমস্ত বিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ঐশ্বর্য নিহিত আছে।

আমি এসব কথা বলছি, যেন কেউ তোমাদের বড় বড় মতবাদ দিয়ে বিপথগামী না করে; যা মনে হয় ভাল কিন্তু আসলে নিছক মিথ্যা। দৈহিকভাবে আমি তোমাদের কাছ থেকে দূরে থাকলেও আত্মিকভাবে আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি। তোমাদের সুশৃঙ্খল জীবন দেখে ও খ্রীষ্টে তোমাদের সুদৃঢ় বিশ্বাস দেখে আমি আনন্দিত।

খ্রীষ্টেতে জীবনযাপন কর

খ্রীষ্ট যীশুকে তোমরা যেমনভাবে প্রভু বলে গ্রহণ করেছ তেমনভাবেই যীশুতে জীবনযাপন করতে থাক। খ্রীষ্টের মধ্যে গভীরভাবে গেঁথে গিয়ে তাঁরই ওপরে তোমরা গড়ে ওঠো এবং যেমন তোমাদের শেখানো হয়েছে সেইভাবেই বিশ্বাসে দৃঢ় হও; আর সর্বদা কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ দাও।

সাবধান থেকো, কেউ যেন দর্শন বিদ্যা ও ফাঁকির ছলনা দ্বারা তোমাদের বিশ্বাস থেকে সরিয়ে না নিয়ে যায়। ঐসব মতবাদ খ্রীষ্ট হতে আসে নি, এসেছে মানুষের পরম্পরাগত শিক্ষা ও জগতের লোকদের প্রাথমিক ধারণার মধ্য দিয়ে। কারণ ঈশ্বরের সম্পূর্ণতা খ্রীষ্টের দেহের মধ্যে বাস করেছে; 10 আর তোমরা খ্রীষ্টেতেই পূর্ণতা লাভ করেছ, তোমাদের আর কিছুরই প্রয়োজন নেই। খ্রীষ্ট সমস্ত শাসক ও আধিপত্যের কর্তা।

11 খ্রীষ্টে তোমাদের ভিন্ন রকমের সুন্নত হয়েছে। সেই সুন্নত মানুষের হাত দিয়ে হয় নি, এই সুন্নত হচ্ছে তোমাদের পাপময় প্রকৃতি থেকে মুক্তিলাভ; আর এই রকমের সুন্নত খ্রীষ্টেই সম্পন্ন হয়েছে। 12 তোমাদের বাপ্তিস্মের সময় তোমাদের পুরানো সত্ত্বা মরে গিয়েছিল, তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে সমাধিস্থ হয়েছিলে। সেই বাপ্তিস্মে তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে পুনরুত্থিত হয়েছিলে কারণ ঈশ্বরের পরাক্রমে তোমাদের বিশ্বাস ছিল। খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করতে ঈশ্বরের সেই পরাক্রম প্রকাশিত হয়েছিল।

13 তোমাদের পাপের কারণে এবং তোমাদের পাপময় প্রকৃতির কবল থেকে উদ্ধার লাভ বা সুন্নত হয় নি বলে তোমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলে। কিন্তু খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বর তোমাদের জীবিত করলেন, আর ঈশ্বর তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করলেন। 14 ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার ফলে আমরা দায়বদ্ধ ছিলাম, সেই দায় এর মধ্যে আমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনের ব্যর্থতার কথা লিখিত ছিল; কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই দায় মকুব করলেন। ঈশ্বর সেই দায় এর তালিকা নিয়ে ক্রুশের উপর পেরেক দিয়ে ঝুলিয়ে দিলেন; 15 আর এইভাবে সমস্ত (আত্মিক) শাসক ও আধিপত্যকে পরাস্ত করলেন। ঈশ্বর জগতকে দেখালেন যে তারা শক্তিহীন।

মানুষের তৈরী নিয়ম অনুসরণ করো না

16 এই জন্য খাদ্য কি পানীয় নিয়ে বা কোন পর্ব পালন, অমাবস্যা, কি বিশ্রামবারের বিশেষ দিনগুলি পালন নিয়ে কেউ যেন তোমাদের বিচার না করে। 17 অতীতে ঐ সবকিছু ছিল ভবিষ্যতে যা হবে তার ছায়ার মতো, কিন্তু নতুন যা কিছু আসছিল তা খ্রীষ্টের। 18 যারা বিনম্রতার ভান করে এবং স্বর্গদূতদের উপাসনা করে আমোদ পায় তাদের কেউ যেন তোমাদের পুরস্কার প্রাপ্তির অযোগ্যতা প্রমাণ না করে। এইরূপ ব্যক্তি সবসময়েই নিজের দেখা দর্শনের কথা বলে এবং অনাত্মিক চিন্তার দ্বারা বিনা কারণে বিনাশরূপ অহঙ্কারে ফুলে ওঠে। 19 এরূপ লোকেরা খ্রীষ্টকে ধরে থাকে না, যিনি দেহের মস্তক স্বরূপ। সমস্ত দেহটাই খ্রীষ্টের উপর নির্ভরশীল এবং খ্রীষ্টের জন্যই দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি পরস্পরকে যত্ন করে ও পরস্পরের জন্য চিন্তা করে। এতেই দেহ শক্তিশালী হয় এবং দেহকে একসাথে ধরে রাখে, আর এইভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দেহ বৃদ্ধিলাভ করে।

20 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমাদের মৃত্যু হয়েছে বলে তোমরা জগতের প্রাথমিক শিক্ষার অধীন নও। তবু এমনভাবে চলছ যেন মনে হচ্ছে তোমরা এখনও জগতের লোক। তোমরা জগতের এইসব নিয়ম কানুন এখনও মেনে চলছ যেমন: 21 “ওটা খাওয়া ঠিক নয়,” “ওটা চেখে দেখবে না,” “ওটা ছুঁয়ো না” ইত্যাদি। 22 এসব নিয়ম কানুনের অন্তর্গত বস্তু (বিষয়) ব্যবহারে ভয় পায় এবং এগুলি গড়ে উঠেছে মানুষের আদেশ ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে। 23 ঈশ্বরের নির্দেশ নয়, এসব নিয়ম কানুন হল মানুষের গড়া ধর্মের অংশ ও জ্ঞানপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় এবং যাতে বিনয়ের ভান ও কৃচ্ছসাধন করার কথা থাকে। কিন্তু এইসব নিয়ম কানুন মানুষের মধ্যে যে পাপ প্রবৃত্তিগুলি থাকে সেগুলিকে বশে আনতে পারে না।