Add parallel Print Page Options

পরিচালকের প্রতি: প্রভুর দাস দায়ূদের একটি গীত। প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন, তখন দায়ূদ এই গীতটি লিখেছিলেন।

18 তিনি বললেন, “প্রভু আমার শক্তি,
    আমি আপনাকে ভালোবাসি!”

প্রভুই আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
    আমার ঈশ্বর, আমার শিলা। আমি তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই।
ঈশ্বরই আমার ঢালস্বরূপ। তাঁর শক্তি আমায় রক্ষা করে।
    দুর্গম পাহাড়ে প্রভুই আমার গোপন আশ্রয়স্থল।

ওরা আমায় উপহাস করেছে।
    কিন্তু আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি
    এবং আমার শত্রুদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছি!
আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল!
    আমার চারপাশে ছিল মৃত্যুর দড়ি।
    এক তীব্র বন্যা আমাকে পাতালের দিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
আমার চারপাশে ছিল কবরের রজ্জুগুলি।
    আমার সামনে পড়েছিল মৃত্যুর ফাঁদ।
ফাঁদে বদ্ধ হয়ে, আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চাইলাম।
    হ্যাঁ, আমি আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম।
ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন।
    তিনি আমার কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন।
    তিনি আমার সাহায্যের জন্য কান্না শুনতে পেলেন।
সারা পৃথিবী কেঁপে উঠলো,
    পর্বতের ভিতগুলো পর্যন্ত নড়ে উঠেছিল। কেন?
    কারণ প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন!
ঈশ্বরের নাক দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে এলো।
    ঈশ্বরের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।
    তাঁর দেহ থেকে জ্বলন্ত আগুন বিচ্ছুরিত হতে লাগলো।
আকাশমণ্ডল বিদীর্ণ করে প্রভু নীচে নেমে এলেন!
    একটি ঘন কালো মেঘের ওপর তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।
10 বাতাসের পাখায় চড়ে তিনি আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন।
    বাতাসের ওপর ভর করে, তিনি সুদূর শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন।
11 প্রভু একটা ঘন কালো মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন, সেই মেঘ তাঁকে তাঁবুর মত ঘিরেছিল।
    তিনি ঘন বজ্রময় মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন।
12 তারপর মেঘ ভেদ করে ঈশ্বরের আলোকময় ঔজ্জ্বল্য বেরিয়ে এলো।
    সেখানে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি এবং বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা দিল।
13 আকাশ থেকে প্রভু বিদ্যুতের মত ঝলসে উঠলেন!
    পরাৎ‌‌পরের রব শোনা গেল।
    সেখানে তখন শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রসহ অগ্নিময় বিদ্যুতের ঝলক ছিল।
14 প্রভু তাঁর তীরসমূহ[a] নিক্ষেপ করে শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেন।
    প্রভু তীরের মত ক্ষিপ্রগতিতে অনেকগুলো অশনিপাত করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো।

15 প্রভু আপনি উচ্চস্বরে আপনার আজ্ঞা দিলেন
    এবং তীব্র বেগে বাতাস বইতে শুরু করলো।
জল পেছনে সরে গেল এবং আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখতে সমর্থ হলাম।
    আমরা পৃথিবীর ভিত দেখতে পেলাম।

16 প্রভু ওপর থেকে নীচে পৌঁছলেন এবং আমাকে রক্ষা করলেন।
    প্রভু আমাকে গভীর জল থেকে টেনে তুললেন।
17 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিলো।
    ওই সব লোক আমায় ঘৃণা করেছে।
    আমার কাছে আমার শত্রুরা বেশ শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেছেন!
18 আমি সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম এবং আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিল।
    কিন্তু আমাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রভু সেখানে ছিলেন!
19 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তাই তিনি আমায় উদ্ধার করলেন।
    তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেন।
20 আমি নিস্পাপ, তাই প্রভু আমাকে আমার যোগ্য পুরস্কার দেবেন।
    আমি কোন অন্যায় কাজ করি নি, তাই তিনি আমার জন্য হিতকর কাজই করবেন।
21 কেন? কারণ আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি!
    আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করি নি।
22 আমি সর্বদাই প্রভুর নির্দেশসমূহ স্মরণে রাখি।
    আমি তাঁর নির্দেশিত বিধি পালন করি!
23 তাঁর সামনে আমি সর্বদাই সৎ‌ ও বিশুদ্ধ ছিলাম।
    আমি নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে দূরে রেখেছিলাম।
24 এই কারণে প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন!
    কেন? কারণ আমি নির্দোষ!
প্রভু দেখেছেন, আমি কোন গর্হিত কাজ করি নি।
    তাই আমার প্রতি তিনি হিতকর কাজই করবেন।

25 প্রভু, যদি কোন লোক প্রকৃতই আপনাকে ভালোবাসে আপনিও তাঁর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করুন।
    আপনার প্রতি কেউ যদি সৎ‌ ও একনিষ্ঠ হয়, আপনিও তার প্রতি সৎ‌ হন।
26 হে প্রভু, যারা ভাল এবং শুচি তাদের কাছে আপনিও ভাল এবং শুচি।
    কিন্তু, নীচতম এবং ক্রুরতম ব্যক্তিকেও আপনি পরাক্রমী করতে পারেন।
27 প্রভু, নম্র লোকদের আপনি সাহায্য করেন।
    কিন্তু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের আপনি অবদমিত করেন।
28 প্রভু, আপনিই আমার প্রদীপ জ্বালান।
    আমার ঈশ্বর, আমার চারদিকের অন্ধকারকে আলোকিত করেন!
29 আপনার সাহায্যে হে প্রভু, আমি সৈন্যদের সঙ্গে ছুটতে পারি।
    ঈশ্বরের সাহায্য পেয়ে, আমি শত্রুদের দেওয়ালের ওপর চড়তে পারি।

30 ঈশ্বর সর্বদাই যা সঠিক তাই করে থাকেন।
    প্রভুর বাক্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
    যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে, তিনি তাদের রক্ষা করেন।
31 প্রভু ছাড়া আর অন্য কোন ঈশ্বর নেই।
    আমাদের প্রভু ছাড়া আর কোন শিলা নেই।
32 ঈশ্বর আমায় শক্তি দেন।
    তিনি আমাকে পবিত্র জীবনযাপন করতে সাহায্য করেন।
33 ঈশ্বর আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়তে সাহায্য করেন।
    উচ্চস্থানে তিনিই আমাকে অবিচল রাখেন।
34 ঈশ্বর আমাকে যুদ্ধের কৌশল শিক্ষা দেন,
    তাই আমার বাহুগুলি একটি শক্তিশালী ধনুকে ছিলা পরাতে পারে।

35 ঈশ্বর আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং জয়ী হতে সাহায্য করেছেন।
    আপনার ডান হাত দিয়ে আপনি সহায়তা করেছেন।
    আমার শত্রুকে পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
36 আমার পা এবং গোড়ালি শক্ত করে দিন,
    যেন আমি হোঁচট না খেয়ে দ্রুত দৌড়তে পারি।

37 আমি যেন আমার শত্রুদের তাড়া করতে পারি এবং তাদের ধরে ফেলতে পারি।
    তাদের শেষ না করে আমি আর ফিরবো না!
38 আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করবো। তারা আর উঠে দাঁড়াবে না।
    আমার সব শত্রু আমার পায়ের নীচে পড়ে থাকবে।
39 ঈশ্বর, যুদ্ধে আপনিই আমাকে শক্তিশালী করেছেন।
    আপনিই আমার শত্রুকে আমার সামনে ভূপতিত করেছেন।
40 আমার শত্রুদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন
    এবং আমি আমার বিরোধীদের বিনষ্ট করেছি!
41 আমার শত্রুরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল।
    কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না।
তারা এমনকি প্রভুকেও ডেকেছিল,
    কিন্তু প্রভু তাদের উত্তর দেন নি।
42 আমি আমার শত্রুদের মেরে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি।
    তারা ধূলোর মত বাতাসে উড়ে গিয়েছিল।
    আমি তাদের একেবারে খণ্ড বিখণ্ড করে ছেড়েছি।

43 যারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
    আমাকে সেই সব জাতির নেতা বানিয়ে দিন।
    যে সব লোকদের আমি জানি না, তারা আমার সেবা করবে।
44 সেই সব লোক আমার সম্পর্কে শোনামাত্রই আমার আজ্ঞাকারী হবে।
    ঐ বিদেশীরা আমায় ভয় করবে।
45 ঐসব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে যাবে।
    ভয়ে কম্পমান হয়ে ওরা ওদের গোপন ডেরা থেকে বেরিয়ে আসবে।

46 প্রভু জীবন্ত!
    আমি আমার শিলার প্রশংসা করি। ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
    তিনি মহান!
47 ঈশ্বর আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন।
    তিনি লোকদের আমার অধীনে এনে দিয়েছেন।
48     প্রভু, আপনি শত্রুর হাত থেকে আমায় বাঁচিয়েছেন।

যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের পরাস্ত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
    নিষ্ঠুর মানুষের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
49 হে প্রভু, এই কারণে আমি সকল জাতির কাছে আপনার প্রশংসা করি।
    এই জন্যই আপনার নামে আমি স্তোত্র গান করি।

50 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে বহু যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন!
    তাঁর মনোনীত রাজার প্রতি তিনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখান।
    তিনি দায়ূদ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের প্রতি চিরদিন বিশ্বস্ত থাকবেন!

Footnotes

  1. 18:14 তীরসমূহ অর্থাৎ‌ “বিদ্যুৎ।”