Add parallel Print Page Options

বাকসংযমের প্রয়োজনীয়তা

আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে বেশী লোকের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করার দরকার নেই, কারণ তোমরা জান যে আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের থেকে আমাদের বিচার কঠোর হবে।

কারণ আমরা সকলেই নানাভাবে অন্যায় করে থাকি। যদি কেউ তার কথাবার্তায় অসংযত না হয়, তবে সে একজন খাঁটি লোক, সে সব বিষয়ে নিজের দেহকে সংযত রাখতে পারে। ঘোড়াদের বশে রাখার জন্য, আমরা তাদের মুখে বলগা দিই এবং তার ফলে তাদের সমস্ত দেহকে আমরা আমাদের পছন্দমত যে কোনও দিকে পরিচালিত করতে পারি। আবার জাহাজের কথা ভাব, তারা কত প্রকাণ্ড, প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিয়ে চলে, অথচ ছোট্ট একটা হালের সাহায্যে নাবিক সেটাকে যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়। তেমনি জিভও দেহের একটা ছোট অঙ্গ, তবু তা বড় বড় কথা বলে।

দেখ আগুনের একটা ছোট ফুলকি কেমন করে এক বিরাট বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। জিভও তেমনি আগুনের ফুলকির মতো। আমাদের দেহের অঙ্গগুলির মধ্যে জিভ হল অধর্মের এক জগত, কারণ জিভ থেকেই নানা মন্দ আমাদের সমস্ত দেহে ছড়িয়ে পড়ে। নরকের আগুনে জিভ জ্বলে উঠে গোটা জীবনকে প্রভাবিত করে।

মানুষ সব রকমের পশু-পাখী, সরীসৃপ ও সমুদ্রের প্রাণীকে দমন করে রাখতে পারে আর তাদের বশে রাখতে পারে; কিন্তু কোন মানুষ জিভকে বশে রাখতে পারে না, এই জিভ সব সময়ই অস্থির, মন্দ ও মারাত্মক বিষে ভরা। এই জিভ দিয়েই আমরা কখনও আমাদের প্রভু ও পিতার প্রশংসা করি, আবার কখনও বা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে অভিশাপ দিই। 10 একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ নির্গত হয়। ভাই ও বোনেরা, এমন হওয়া উচিত নয়। 11 একই উৎস থেকে কি কখনও মিষ্টি ও তেতো দুরকম জল নিঃসৃত হয়? 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দ্রাক্ষা লতায় কি ডুমুর ফল ধরে? তেমনি নোনা জলের উৎস থেকে কি মিষ্টি জল পাওয়া যায়?

প্রকৃত প্রজ্ঞা

13 তোমাদের মধ্যে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান কে? সে সৎ‌ জীবনযাপন করে ও নম্রতার সাথে ভাল কাজ করে গর্বহীনভাবে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ করুক। 14 তোমাদের মনে যদি তিক্ততা, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা থাকে তাহলে তোমাদের জ্ঞানের বড়াই করো না; করলে তোমাদের গর্ব হবে আর এক মিথ্যা, যা সত্যকে ঢেকে রাখে। 15 এই ধরণের “জ্ঞান” যা ঈশ্বর থেকে লাভ হয় না তা পার্থিব, আত্মিক নয়, তা দিয়াবলের কাছ থেকে আসে। 16 যেখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা ও সব রকমের নোংরামি থাকে। 17 কিন্তু যে জ্ঞান ঈশ্বর থেকে আসে তা প্রথমতঃ শুচিশুদ্ধ পরে শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, বাধ্যতা, দয়া ও সৎ‌ কাজে পূর্ণ, পক্ষপাতশূন্য ও আন্তরিক। 18 যারা শান্তির জন্য শান্তির পথে কাজ করে চলে, তারা উত্তম জিনিস লাভ করে যা যথার্থ জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে আসে।