Add parallel Print Page Options

প্রজ্ঞা, এক ধার্মিক রমণী

শোন! প্রজ্ঞা কি তোমাকে ডাকছে?
    হ্যাঁ, বোধ তোমাকে ডাকছে।
মহিলাটি (প্রজ্ঞা) পাহাড়ের চূড়ায়,
    সড়কের ধারে, সকল পথের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে।
সে নগরের প্রধান ফটকগুলির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
    সেখান থেকেই সে উচ্চস্বরে ডাক দিচ্ছে।

প্রজ্ঞা বলছে, “হে মানবগণ, আমি তোমাদের ডাকছি।
    চিৎকার করে সমস্ত লোককে ডাকছি।
যদি তোমরা অবোধ হও, বুদ্ধিমান হওয়ার চেষ্টা কর।
    নির্বোধরা বোঝার চেষ্টা কর।
শোন! আমি যেসব জিনিসের শিক্ষা দিই তা গুরুত্বপূর্ণ।
    আমি যা বলি তা সঠিক।
আমার কথাগুলি সত্য।
    আমি ক্ষতিকারক মিথ্যাকে ঘৃণা করি।
আমি যা বলি তা সঠিক, আমি মিথ্যা কথা বলি না।
    আমার কথাগুলোয় কোন মিথ্যা বা ভুল নেই।
আমার কথাগুলি, যাদের বোধশক্তি আছে
    সেই সব লোকের কাছে পরিষ্কার।
    জ্ঞানবানরা আমার উপদেশ বুঝতে সক্ষম।
10 আমার অনুশাসন গ্রহণ কর। তার মূল্য রূপার চেয়েও বেশী।
    সেটি উৎকৃষ্টতম সোনার চেয়েও মূল্যবান।
11 জ্ঞান, দূর্মূল্য মুক্তার চেয়েও দামী।
    মানুষের অভীষ্ট কোন বস্তুই তার সমকক্ষ নয়।

প্রজ্ঞা যা করে

12 “আমি প্রজ্ঞা।
    আমি সুবিচারের সঙ্গে বাস করি।
    আমি সুপরিকল্পনা এবং জ্ঞান খুঁজে পেয়েছি।
13 প্রভুকে শ্রদ্ধা জানানোর অর্থ হল পাপকে ঘৃণা করা।
    সেইসব মানুষ যারা নিজেকে অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে আমি তাদের ঘৃণা করি।
    আমি পাপের পথ এবং মিথ্যাভাষীকে ঘৃণা করি।
14 আমি মানুষকে সুবুদ্ধি এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করি।
    আমিই সুবিবেচনা এবং ক্ষমতার আধার!
15 রাজারা শাসনকার্যে আমাকে ব্যবহার করেন।
    ন্যায্য আইন বানাতে শাসকরা আমাকে ব্যবহার করেন।
16 পৃথিবীর সমস্ত ভাল শাসক
    তাঁদের অধীনস্থ সমস্ত লোককে শাসন করতে আমাকে ব্যবহার করেন।
17 যে সব লোক আমাকে ভালোবাসে আমিও তাদের ভালোবাসি।
    যারা সযত্নে আমার অন্বেষণ করে তারা আমাকে খুঁজে পাবে।
18 আমার দেবার মত ধনসম্পদ ও সম্মান রয়েছে।
    আমি সত্যিকারের সম্পদ এবং সাফল্য প্রদান করি।
19 আমি যে সব জিনিস দিই তা খাঁটি সোনার চেয়েও ভালো
    এবং আমার উপহারসমূহ খাঁটি রূপোর চেয়েও ভালো।
20 আমি ধর্মের পথে চলি।
    আমি ন্যায় বিচারের পথ ধরে চলি।
21 যারা আমাকে ভালোবাসে আমি তাদের সম্পদ দিই।
    হ্যাঁ, আমি তাদের ঘরবাড়ি ধনসম্পদে পরিপূর্ণ করে তুলি।

22 “বহুকাল আগে, শুরুতে প্রভু অন্য আর কিছু সৃষ্টি করবার আগে
    আমাকে সৃষ্টি করেছিলেন।
23 আমিই আদি। আমাকে সবার আগে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
    পৃথিবীর আগে আমাকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করা হয়েছিল।
24 মহাসাগরের আগে আমাকে গঠন করা হয়েছিল।
    সেখানে জল সৃষ্টির আগে আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
25 আমি পর্বতসমূহের আগে জন্মেছিলাম। আমি পাহাড়সমূহের আগে জন্মেছিলাম।
26     প্রভুর পৃথিবী সৃষ্টির আগে আমি জন্মেছিলাম, ভূমি তৈরীর আগে আমি জন্মেছিলাম।
    ঈশ্বরের পৃথিবীতে প্রথম ধূলিকনা সৃষ্টি করার আগে আমি জন্মেছিলাম।
27 প্রভু যখন আকাশ তৈরী করেন
    সেই সময় আমি ছিলাম।
    প্রভু যখন ভূমির চারদিকে একটি বৃত্ত এঁকেছিলেন এবং সাগরের সীমারেখা স্থির করেছিলেন তখন আমি ছিলাম।
28 মেঘ সৃষ্টির আগে আমি রূপ পেয়েছিলাম।
    ঈশ্বর যখন সাগরে জল ঢালছিলেন, আমি সেখানে ছিলাম।
29 প্রভু যখন সমুদ্রসমূহে জলের সীমা নির্ধারণ করেছিলেন
    সে সময়ে আমি সেখানে ছিলাম।
সমুদ্রের তরঙ্গদল কখনই প্রভুর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে না।
    প্রভু যখন পৃথিবীর ভিত্তিস্থাপন করেন, তখন আমি ছিলাম।
30 আমি একজন দক্ষ কর্মীর মত প্রভুর পাশে ছিলাম।
    আমার জন্যই প্রভু প্রতি দিন আনন্দবোধ করেছেন।
    আমি তাঁর সঙ্গে সব সময় হাসি মুখে থেকেছি।
31 তাঁর জগৎ‌‌ আমাকে খুশি করে।
    আমি মানবজাতির সঙ্গ সুখ অনুভব করি।

32 “আমার পুত্রগণ, এখন আমার কথাগুলি শোন!
    এবং তোমরাও আমার আশীর্বাদ পাবে!
33 আমার শিক্ষামালা শোন এবং জ্ঞানী হয়ে ওঠো।
    ওগুলোকে অগ্রাহ্য কোরো না।
34 যে আমার কথা মেনে চলবে সে ধন্য হবে।
    এমন একজন লোক প্রতি দিন আমার দরজার দিকে লক্ষ্য করে।
    সে আমার দরজার পথে প্রতীক্ষা করে।
35 যে আমাকে খুঁজে পায় সে জীবন লাভ করে।
    সে প্রভুর কাছ থেকে ভালো জিনিস পাবে!
36 কিন্তু যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে পাপ করে সে নিজেকে আঘাত করে।
    যে সব লোক আমাকে ঘৃণা করে
তারা মৃত্যুকে ভালোবাসে!”