মথি 19:3-26:2
Bengali: পবিত্র বাইবেল
3 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো যে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?”
4 যীশু বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, যে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের ‘পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’(A) 5 এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেই দুজন এক দেহ হবে।’(B) 6 তাই তারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন। তাই ঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক।”
7 তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, “তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?”[a]
8 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না। 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে।”[b]
10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনই হয়, তখন বিয়ে না করাই ভাল।”
11 যীশু তাঁদের বললেন, “সবাই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই তা মেনে নিতে পারে। 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃ গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়, যারা বিয়ে করেই না। আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না। আবার এমন কিছু লোক আছে, যারা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না। যে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।”
যীশু ছোট ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করলেন
(মার্ক 10:13-16; লূক 18:15-17)
13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, যেন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন। 14 তখন যীশু তাদের বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যই তো স্বর্গরাজ্য।” 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন।
একজন ধনী লোক যীশুকে অনুসরণ করতে অস্বীকার করল
(মার্ক 10:17-31; লূক 18:18-30)
16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?”
17 যীশু তাকে বললেন, “কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই, আর তিনি ঈশ্বর। যাই হোক্ তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর।”
18 সে বলল, “কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?”
যীশু তাকে বললেন, “‘তুমি অবশ্যই নরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করো’(C) ও ‘প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো।’”(D)
20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, “আমি তো এর সবই পালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?”
21 যীশু তাঁকে বললেন, “যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও। তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে। তারপর এস, আমার অনুসারী হও।”
22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল।
23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে। 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ।”
25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তাঁরা তখন বললেন, “তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সম্ভব?”
26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে তা অসম্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সম্ভব।”
27 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?”
28 যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেই নতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে। 29 আর যে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে। 30 কিন্তু এমন অনেকে যারা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যারা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে।
যীশু মজুরদের বিষয় নিয়ে এক দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী শোনালেন
20 “স্বর্গরাজ্য এমন একজন জমিদারের মতো, যিনি তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করার জন্য ভোরবেলাই মজুর আনতে বেরিয়ে পড়লেন। 2 তিনি মজুরদের দিনে একটি রৌপ্যমুদ্রা মজুরী দেবেন বলে ঠিক করে, তাদের তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে পাঠিয়ে দিলেন।
3 “প্রায় নটার সময় তিনি বাড়ির বাইরে গেলেন আর দেখলেন, কিছু লোক বাজারে তখনও কিছু না করে দাঁড়িয়ে আছে। 4 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরাও আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে যাও, আমি তোমাদের ন্যায় মজুরী দেব।’ 5 তখন তারাও দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে গেল।
“সেই ব্যক্তি আবার প্রায় বেলা বারোটা ও তিনটার সময় বাড়ির বাইরে গিয়ে ঐ একই রকম ভাবে মজুরদের কাজে পাঠালেন। 6 প্রায় পাঁচটার সময় তিনি আবার বাইরে গেলেন ও আরো কিছু লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের বললেন, ‘তোমরা সারাদিন কোন কাজ না করে এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন?’
7 “তারা তাঁকে বলল, ‘কেউ আমাদের কাজে নেয় নি।’
“তখন ক্ষেতের মালিক তাদের বললেন, ‘তোমরাও গিয়ে আমার ক্ষেতে কাজে লাগো।’
8 “দিনের শেষে ক্ষেতের মালিক তাঁর নায়েবকে ডেকে বললেন, ‘মজুরদের সকলকে ডাক ও তাদের মজুরী মিটিয়ে দাও; শেষের জন থেকে শুরু করে প্রথম জন পর্যন্ত সকলকে দাও।’
9 “বিকেল পাঁচটায় যে মজুররা কাজে লেগেছিল, তারা এসে প্রত্যেকে একটা রূপোর টাকা নিয়ে গেল। 10 প্রথমে যাদের কাজে লাগানো হয়েছিল, তারা বেশী পাবে বলে আশা করেছিল, কিন্তু তারাও প্রত্যেকে একটা করে রূপোর টাকা পেল। 11 তারা তা নিল বটে কিন্তু ক্ষেতের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, 12 যারা শেষে কাজে লেগেছিল তারা মাত্র একঘন্টা কাজ করেছে, আর আপনি তাদের ও আমাদের সমান মজুরী দিলেন; অথচ আমরা কড়া রোদে সারা দিন ধরে কাজ করলাম।
13 “এর উত্তরে তিনি তাদের একজনকে বললেন, ‘বন্ধু, আমি তো তোমার সঙ্গে কোন অন্যায় ব্যবহার করিনি। তুমি কি এক টাকা মজুরীতে কাজ করতে রাজী হও নি? 14 তোমার যা পাওনা তা নিয়ে বাড়ি যাও। আমার ইচ্ছা, আমি তোমাকে যা দিয়েছি, এই শেষের জনকেও তাই দেব। 15 যা আমার নিজের, তা আমার খুশীমতো ব্যবহার করার অধিকার কি আমার নেই? আমি দয়ালু, এই জন্য কি তোমার ঈর্ষা হচ্ছে?’
16 “ঠিক এই রকম যারা শেষের তারা প্রথম হবে, আর যারা প্রথম, তারা শেষে পড়ে যাবে।”
যীশু নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
(মার্ক 10:32-34; লূক 18:31-34)
17 এরপর যীশু জেরুশালেমের দিকে যাত্রা করলেন। সঙ্গে তাঁর বারোজন শিষ্যও ছিলেন, পথে তিনি তাঁদের একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, 18 “শোন, আমরা এখন জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছি। সেখানে মানবপুত্রকে প্রধান যাজকদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের হাতে সঁপে দেওয়া হবে, তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবে। 19 তারা তাঁকে বিদ্রূপ করবার জন্য, বেত মারবার ও ক্রুশে দেবার জন্য অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় তিনি জীবিত হয়ে উঠবেন।”
এক মায়ের বিশেষ অনুগ্রহ ভিক্ষা
(মার্ক 10:35-45)
20 পরে সিবদিয়ের ছেলেদের মা তার দুই ছেলেকে নিয়ে যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, আমার জন্য কিছু করুন।
21 যীশু তাকে বললেন, “তুমি কি চাও?”
তিনি বললেন, “আপনি আমায় এই প্রতিশ্রুতি দিন যেন আপনার রাজ্যে আমার এই দুই ছেলে একজন আপনার ডানপাশে আর একজন বাঁ পাশে বসতে পায়।”
22 এর উত্তরে যীশু বললেন, “তোমরা কি চাইছ তা তোমরা জান না। আমি যে দুঃখের পেয়ালায় পান করতে যাচ্ছি তাতে কি তোমরা পান করতে পার?”
ছেলেরা তাঁকে বলল, “হ্যাঁ, পারি!”
23 তিনি তাদের বললেন, “বাস্তবিক, তোমরা আমার পেয়ালায় পান করবে; কিন্তু আমার ডানদিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই। আমার পিতা যাদের জন্য তা ঠিক করে রেখেছেন, তারাই তা পাবে।”
24 বাকি দশজন শিষ্য এই কথা শুনে ঐ দুই ভাইয়ের ওপর রেগে গেলেন। 25 তখন যীশু তাঁদের নিজের কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা একথা জান যে, অইহুদীদের শাসনকর্তারাই তাদের প্রভু, আর তাদের মধ্যে যারা প্রধান তারা তাদের ওপর হুকুম চালায়। 26 কিন্তু তোমাদের মধ্যে সেরকম হওয়া উচিত নয়। তোমাদের মধ্যে যে বড় হতে চায়, তাকে তোমাদের সেবক হতে হবে। 27 আর তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করতে চায়, সে যেন তোমাদের দাস হয়। 28 মনে রেখো, তোমাদের মানবপুত্রের মতো হতে হবে, যিনি সেবা পেতে নয় বরং সেবা করতে এসেছেন, আর অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসাবে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করতে এসেছেন।”
দুজন অন্ধকে দৃষ্টিদান
(মার্ক 10:46-52; লূক 18:35-43)
29 তাঁরা যখন যিরীহো শহর ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখন বহু লোক যীশুর পিছু পিছু চলল। 30 সেখানে পথের ধারে দুজন অন্ধ বসেছিল। যীশু সেই পথ দিয়ে যাচ্ছেন শুনে তারা চিৎকার করে বলল, “প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন।”
31 লোকেরা তাদের ধমক দিয়ে চুপ করতে বলল। কিন্তু তারা আরো চিৎকার করে বলতে লাগল, “প্রভু দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন!”
32 তখন যীশু দাঁড়ালেন আর তাদের ডেকে বললেন, “তোমরা কি চাও? আমি তোমাদের জন্য কি করব?”
33 তারা বলল, “প্রভু আমরা যেন দেখতে পাই।”
34 তখন তাদের প্রতি যীশুর করুণা হল। তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর তখনই তারা দৃষ্টি ফিরে পেল ও তাঁর পেছনে পেছনে চলল।
রাজার মতো যীশু জেরুশালেমে এলেন
(মার্ক 11:1-11; লূক 19:28-38; যোহন 12:12-19)
21 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের কাছাকাছি জৈতুন পর্বতমালার ধারে অবস্থিত বৈত্ফগী গ্রামের ধারে এসে পৌঁছালেন। 2 তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এই বলে পাঠালেন, “তোমরা ঐ সামনের গ্রামে যাও। সেখানে দেখবে একটা গাধা বাঁধা আছে আর একটা বাচ্চাও তার সাথে আছে। তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এস। 3 কেউ যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করে, তবে তাকে বোলো, ‘প্রভু এদের চান। তিনি পরে তাদের ফেরত দেবেন।’”
4 এমনটি হল যেন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়:
5 “সিয়োন নগরীকে বল,
‘দেখ তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন।
তিনি নম্র, তিনি গাধার ওপরে,
একটি ভারবাহী গাধার বাচ্চার ওপরে চড়ে আসছেন।’”(E)
6 যীশু যেমন বলেছিলেন তাঁর শিষ্যেরা গিয়ে তেমনি করলেন। 7 তারা সেই গাধা ও গাধার বাচ্চাটা এনে তাদের ওপর নিজেদের গায়ের কাপড় বিছিয়ে দিলে যীশু তাদের উপর বসলেন। 8 লোকদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের জামা খুলে পথে বিছিয়ে দিল, আবার অনেকে গাছের ডাল কেটে নিয়ে পথের ওপরে বিছিয়ে দিল। 9 যারা যীশুর সামনে ও পিছনে ভীড় করে যাচ্ছিল, তারা চিৎকার করে বলতে লাগল,
“দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্।
‘যিনি প্রভুর নামে আসছেন, তিনি ধন্য!’(F)
স্বর্গে ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্।”
10 যীশু যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন, তখন সমস্ত শহরে খুব শোরগোল পড়ে গেল। লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, “ইনি কে?”
11 জনতা বলে উঠল, “ইনি যীশু, গালীলের নাসরতীয় শহরের সেই ভাববাদী।”
যীশু মন্দিরে গেলেন
(মার্ক 11:15-19; লূক 19:45-48; যোহন 2:13-22)
12 এরপর যীশু মন্দির চত্বরে ঢুকলেন; আর যারা সেই মন্দির চত্বরের মধ্যে বেচাকেনা করছিল, তাদের তাড়িয়ে দিলেন। যারা টাকা বদল করে দেবার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যাঁরা ডালায় করে পায়রা বিক্রি করছিল তিনি তাদের টেবিল ও ডালা উল্টে দিলেন। 13 যীশু তাদের বললেন, “শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনা গৃহ।’(G) কিন্তু তোমরা তা দস্যুদের আস্তানায় পরিণত করেছ।(H)”
14 এরপর মন্দির চত্বরের মধ্যে অনেক অন্ধ ও খঞ্জ যীশুর কাছে এলে তিনি তাদের সুস্থ করলেন। 15 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা দেখলেন যে, যীশু অনেক অলৌকিক কাজ করছেন, আর যখন দেখলেন মন্দির চত্বরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা চিৎকার করে বলছে, “প্রশংসা, দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্,” তখন তাঁরা রেগে গেলেন।
16 তাঁরা যীশুকে বললেন, “ওরা যা বলছে, তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ?”
যীশু তাদের জবাব দিলেন, “হ্যাঁ, পাচ্ছি, তোমরা কি শাস্ত্রে পড় নি, ‘তুমি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরই প্রশংসা করতে শিখিয়েছ?’”(I)
17 এরপর যীশু তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গিয়ে রাতে সেখানেই থাকলেন।
বিশ্বাসের শক্তি
(মার্ক 11:12-14, 20-24)
18 পরদিন সকালে তিনি যখন জেরুশালেমে ফিরছিলেন, সেই সময় যীশুর খিদে পেল। 19 তিনি পথের ধারে একটি ডুমুর গাছ দেখতে পেয়ে সেই গাছটার কাছে গেলেন। কিন্তু পাতা ছাড়া তাতে কিছু দেখতে পেলেন না। তখন তিনি সেই গাছটিকে বললেন, “তোমাতে আর কখনও ফল হবে না।” আর সেই ডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল।
20 এই ঘটনা দেখে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “এই ডুমুর গাছটা এত তাড়াতাড়ি কেমন করে শুকিয়ে গেল?”
21 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের যদি ঈশ্বরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে, যদি সন্দেহ না কর, তবে ডুমুর গাছের প্রতি আমি যা করেছি, তোমরাও তা করতে পারবে। শুধু তাই নয়, তোমরা যদি ঐ পাহাড়কে বল, ‘ওঠ, ঐ সাগরে গিয়ে আছড়ে পড়’ দেখবে তাই হবে। 22 যদি বিশ্বাস থাকে, তবে প্রার্থনায় তোমরা যা চাইবে তা পাবে।”
যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে ইহুদী নেতাদের সন্দেহ
(মার্ক 11:27-33; লূক 20:1-8)
23 যীশু যখন আবার মন্দির চত্বরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “তুমি কোন অধিকারে এসব করছ? এই অধিকার তোমায় কে দিয়েছে?”
24 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, আর তোমরা যদি তার উত্তর দাও তাহলে আমিও তোমাদের বলব আমি কোন অধিকারে এসব করছি। 25 আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার যোহন কোথা থেকে পেয়েছিলেন? তা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে এসেছিল?”
তখন তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে বলল, “আমরা যদি বলি, ঈশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে ও আমাদের বলবে, ‘তবে তোমরা কেন তাকে বিশ্বাস কর নি?’ 26 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে জনসাধারণের কাছ থেকে ভয় আছে, কারণ লোকেরা যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।”
27 তাই এর উত্তরে তারা যীশুকে বললেন, “আমরা জানি না।”
তখন যীশু তাদের বললেন, “তবে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি।”
দুই পুত্রের বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী
28 তারপর যীশু বললেন, “আচ্ছা, এ বিষয়ে তোমরা কি বলবে? একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল। সে তার বড় ছেলের কাছে গিয়ে বলল, ‘বাছা, আজ তুমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে গিয়ে কাজ কর।’
29 “কিন্তু তার ছেলে বলল, ‘আমি যেতে চাই না।’ কিন্তু পরে সে তার মত বদলিয়ে কাজে গেল।
30 “এরপর লোকটি তার অপর ছেলের কাছে গিয়ে তাকেও সেই একই কথা বলল। এর উত্তরে অন্য ছেলেটি বলল, ‘হ্যাঁ, মহাশয় যাচ্ছি।’ কিন্তু সে গেল না।
31 “এই দুজনের মধ্যে কে তার বাবার ইচ্ছা পালন করল?”
তারা বললেন, “বড় ছেলে।”
যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর-আদায়কারীরা ও বেশ্যারা, তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে। 32 আমি একথা বলছি কারণ জীবনের সঠিক পথ দেখাবার জন্য যোহন তোমাদের কাছে এসেছিলেন আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করনি। কিন্তু কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তাকে বিশ্বাস করেছে। এসব দেখেও তোমরা মন পরিবর্তন করনি ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস করনি।
ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন
(মার্ক 12:1-12; লূক 20:9-19)
33 “আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন। পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন। পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন। পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন। 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন।
35 “কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল। 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেই চাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল। 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে।’
38 “কিন্তু চাষীরা যখন দেখল যে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই তার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব।’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল।
40 “এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?”
41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, “তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যারা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে।”
42 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:
‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল,
সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর।
এটা প্রভুরই কাজ,
এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে।’(J)
43 “অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যারা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে। 44 আর ঐ যে পাথর তার ওপরে যে পড়বে সে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাৎ করবে।”[c]
45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাঁদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন। 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত।
নৈশ ভোজে আমন্ত্রিত লোকদের কাহিনী
(লূক 14:15-24)
22 দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আবার তাদের বলতে শুরু করলেন। 2 তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে এই তুলনা দেওয়া যেতে পারে, একজন রাজা যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন। 3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না।
4 “রাজা আবার তাঁর অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, ‘যারা নিমন্ত্রিত তাদের সকলকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত, আমার বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুরগুলো সব মারা হয়েছে, আর সব কিছুই প্রস্তুত। তোমরা বিবাহ ভোজে যোগ দিতে এস।’
5 “কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা তাদের কথায় কান না দিয়ে যে যার কাজে চলে গেল। কেউ বা তার ক্ষেতের কাজে গেল, আবার কেউ গেল তার ব্যবসার কাজে। 6 অন্যরা রাজার সেই দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের খুন করল। 7 এতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তিনি তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সেই খুনীদের মেরে ফেললেন, সৈন্যরা তাদের শহরটিও পুড়িয়ে দিল।
8 “এরপর রাজা তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিয়ের ভোজ প্রস্তুত কিন্তু যারা নিমন্ত্রিত হয়েছিল তারা তার যোগ্য ছিল না। 9 তাই তোমরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও আর যত লোকের দেখা পাও, তাদের সকলকে এই ভোজে যোগ দেবার জন্য ডেকে আনো।’ 10 তখন সেই দাসরা রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল ও মন্দ যাদের পেল তাদের সকলকে ডেকে আনল। তাতে বিয়ে বাড়ির ভোজের ঘর অতিথিতে ভরে গেল।
11 “কিন্তু রাজা অতিথিদের সঙ্গে দেখা করতে এসে সেখানে একজন লোককে দেখতে পেলেন যে বিয়ে বাড়ির পোশাক পরে আসে নি। 12 রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ে বাড়ির উপযুক্ত পোশাক ছাড়াই তুমি কেমন করে এখানে এলে?’ কিন্তু সে চুপ করে থাকল। 13 তখন রাজা তাঁর পরিচারকদের বললেন, ‘এর হাত পা বেঁধে একে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, যেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে।’
14 “কারণ অনেকেই আহুত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।”
ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করল
(মার্ক 12:13-17; লূক 20:20-26)
15 তখন ফরীশীরা সেখান থেকে চলে গেল, আর কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরিকল্পনা করল। 16 তারা হেরোদীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে নিজেদের কয়েকজন অনুগামীকে যীশুর কাছে পাঠাল। এই লোকেরা এসে বলল, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সঠিকভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আর কে কি বলে তার ধার ধারেন না কারণ লোকে কি ভাববে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। 17 তাহলে আপনার কি মত, কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?”
18 যীশু তাদের বদ মতলব বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডের দল আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছ কেন? 19 যে টাকায় কর দেওয়া হয় তা আমাকে দেখাও।” তারা একটা রূপোর টাকা তাঁর কাছে নিয়ে এল। 20 তখন তিনি তাদের বললেন, “এর ওপরে এই মূর্তি ও নাম কার?”
21 তারা বলল, “রোম সম্রাট কৈসরের।”
তখন তিনি তাদের বললেন, “তবে যা কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও।”
22 তারা এই জবাব শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল, তাঁকে আর বিরক্ত না করে সেখান থেকে চলে গেল।
কিছু সদ্দূকীর যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা
(মার্ক 12:18-27; লূক 20:27-40)
23 যাঁরা বলে পুনরুত্থান নেই, সেই সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কিছু লোক সেই দিন যীশুর কাছে এসে তাঁকে একটি প্রশ্ন করলেন। 24 তাঁরা বললেন, “গুরু, মোশি বলেছেন যদি কোন লোক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়, তবে তার নিকটতম আত্মীয়রূপে তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করবে ও তার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ উৎপন্ন করবে।[d] 25 আমাদের জানা এক পরিবারে সাত ভাই ছিল। প্রথম জন বিয়ে করল, তার পরে সে মারা গেল। আর তার কোন সন্তান না থাকাতে, তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করল। 26 এই অবস্থা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম জন পর্যন্ত হল, তারা সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল ও মারা গেল। 27 শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল। 28 এখন আমাদের প্রশ্ন হল, পুনরুত্থানের সময় ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে সেই স্ত্রী কার হবে, সকলেই তো তাকে বিয়ে করেছিল?”
29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম। 30 জেনে রাখো, পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়েও দেওয়া হয় না, তারা বরং স্বর্গদূতদের মতো থাকে। 31 মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিজে যে কথা বলেছেন, তা কি তোমরা পড়নি? 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।’(K) ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদেরই ঈশ্বর।”
33 সমবেত লোকেরা তাঁর এই শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল।
কোন্ আদেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
(মার্ক 12:28-34; লূক 10:25-28)
34 ফরীশীরা যখন শুনলেন যে যীশুর জবাবে সদ্দূকীরা নিরুত্তর হয়ে গেছেন তখন তাঁরা দল বেঁধে যীশুর কাছে এলেন। 35 তাঁদের মধ্যে একজন শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত যীশুকে ফাঁদে ফেলবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36 “গুরু, বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে মহান আদেশ কোনটি?”
37 যীশু তাঁকে বললেন, “‘তোমার সমস্ত অন্তর ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও মন দিয়ে তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’(L) 38 এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম ও মহান আদেশ। 39 আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে এরই অনুরূপ, ‘তুমি নিজেকে যেমন ভালবাস, তেমনি তোমার প্রতিবেশীকেও ভালবাসবে।’(M) 40 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থা ভাববাদীদের সমস্ত শিক্ষা, এই দুটি আদেশের উপর নির্ভর করে।”
যীশু ফরীশীদের প্রশ্ন করলেন
(মার্ক 12:35-37; লূক 20:41-44)
41 ফরীশীরা তখনও সেখানে সমবেত ছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, 42 “খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমরা কি মনে কর? তিনি কার বংশধর?”
তাঁরা বললেন, “তিনি দায়ূদের পুত্র।”
43 যীশু তাদের বললেন, “তবে দায়ূদ কিভাবে পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন? তিনি বলেছিলেন,
44 ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,
যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের নীচে রাখি
ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস ও শাসন কর।’(N)
45 তাহলে, দায়ূদ যখন তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি কেমন করে তাঁর সন্তান হতে পারেন?”
46 কিন্তু এর উত্তরে কেউ একটি কথাও তাঁকে বলতে পারলেন না, আর সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করলেন না।
যীশু ধর্মীয় নেতাদের সমালোচনা করলেন
(মার্ক 12:38-40; লূক 11:37-52; 20:45-47)
23 এরপর যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 “মোশির বিধি-ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দেবার অধিকার ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের আছে। 3 তাই তারা যা যা বলে, তা তোমরা করো এবং মেনে চলো: কিন্তু তারা যা করে তোমরা তা করো না। আমি একথা বলছি, কারণ তারা যা বলে তারা তা করে না। 4 তারা ভারী ভারী বোঝা যা বওয়া কঠিন, তা লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়; কিন্তু সেগুলো সরাবার জন্য নিজেরা একটা আঙ্গুলও নাড়াতে চায় না।
5 “তারা যা কিছু করে সবই লোক দেখানোর জন্য। তারা শাস্ত্রের পদ লেখা তাবিজ বড় করে তৈরী করে, আর নিজেদের ধার্মিক দেখাবার জন্য পোশাকের প্রান্তে লম্বা লম্বা ঝালর লাগায়। 6 তারা ভোজসভায় সম্মানের জায়গায় এবং সমাজ-গৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসতে ভালবাসে। 7 তারা হাটে-বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মানসূচক অভিবাদন ও ‘গুরু’ ডাক শুনতে খুবই ভালবাসে।
8 “কিন্তু তোমরা দেখো, লোকে যেন তোমাদের ‘শিক্ষক’ বলে না ডাকে, কারণ একজনই তোমাদের শিক্ষক, আর তোমরা সকলে পরস্পর ভাই বোন। 9 এই পৃথিবীতে কাউকে ‘পিতা’ বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই, তিনি স্বর্গে থাকেন। 10 কেউ যেন তোমাদের আচার্য্য বলে না ডাকে, কারণ তোমাদের আচার্য্য একজনই, তিনি খ্রীষ্ট। 11 তোমাদের মধ্যে যে সব থেকে শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবক হবে। 12 যে কেউ নিজেকে বড় করে, তাকে নত করা হবে। আর যে কেউ নিজেকে নত করে, তাকে উন্নত করা হবে।
13 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা লোকদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে রাখছ, নিজেরাও তাতে প্রবেশ করো না, আর যারা প্রবেশ করতে চেষ্টা করছে তাদেরও প্রবেশ করতে দিচ্ছ না। 14 [e]
15 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! একজন লোককে নিজেদের ধর্মমতে নিয়ে আসার জন্য তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও। আর সে যখন তোমাদের ধর্মে আসে, তখন তোমরা নিজেদের চেয়ে তাকে দ্বিগুণ নরকের উপযুক্ত করে তোল।
16 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখাও। তোমরা বলে থাক, ‘কেউ যদি মন্দিরের দিব্যি দেয়, তবে তাতে কিছু এসে যায় না। কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের সোনার দিব্যি দেয়, তবে সে সেই শপথে বাঁধা পড়ল; তাকে অবশ্যই তা পূরণ করতে হবে।’ 17 মূর্খ অন্ধের দল! কোনটা শ্রেষ্ঠ, মন্দিরের সোনা অথবা মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করে?
18 “তোমরা আবার একথাও বলে থাক, ‘কেউ যদি যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তাহলে সেই শপথ রক্ষা করার জন্য তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু কেউ যদি যজ্ঞবেদীর ওপর যে নৈবেদ্য থাকে তার নামে শপথ করে, তবে তার শপথ রক্ষা করার জন্য সে দায়বদ্ধ রইল।’ 19 তোমরা অন্ধের দল! কোনটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ, যজ্ঞবেদীতে নৈবেদ্য অথবা বেদী, যা তার ওপরের নৈবেদ্যকে পবিত্র করে? 20 তাই যখন কেউ যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তখন সে যজ্ঞবেদীর ওপর যা কিছু থাকে সে সব কিছুরই বিষয়ে শপথ করে। 21 আর কেউ যখন মন্দিরের নামে শপথ করে, তখন সে জায়গা ও তার মধ্যে যিনি থাকেন, তাঁর নামেও শপথ করে। 22 আর যদি কোন লোক স্বর্গের নামে শপথ করে, তখন সে ঈশ্বরের সিংহাসন ও যিনি সেই সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর নামেও শপথ করে।
23 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা পুদিনা, মৌরী ও জিরার দশভাগের একভাগ ঈশ্বরকে দিয়ে থাক অথচ ন্যায়, দয়া ও বিশ্বস্ততা, ব্যবস্থার এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা অবহেলা করে থাক। আগের ঐ বিষয়গুলি পালন করার সঙ্গে সঙ্গে পরের এই বিষয়গুলি পালন করাও তোমাদের উচিত। 24 তোমরা অন্ধ পথপ্রদর্শক, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে থাক।
25 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু ভেতরটা থাকে লোভ ও আত্মতোষণে ভরা। 26 অন্ধ ফরীশী! প্রথমে তোমাদের পেয়ালার ভেতরটা পরিষ্কার কর, তাহলে গোটা পেয়ালার ভেতরে ও বাইরে উভয় দিকই পরিষ্কার হবে।
27 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যার বাইরেটা দেখতে খুব সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড়গোড় ও সব রকমের পচা জিনিস রয়েছে। 28 তোমরা ঠিক সেইরকম, বাইরের লোকদের চোখে ধার্মিক, কিন্তু ভেতরে ভণ্ডামী ও দুষ্টতায় পূর্ণ।
29 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা ভাববাদীদের জন্য স্মৃতিসৌধ গাঁথ ও ঈশ্বর ভক্ত লোকদের কবর সাজাও, 30 আর বলে থাক, ‘আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম, তবে ভাববাদীদের হত্যা করার জন্য তাদের সাহায্য করতাম না।’ 31 এতে তোমরা নিজেদের বিষয়েই সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, ভাববাদীদের যারা হত্যা করেছিল তোমরা তাদেরই বংশধর। 32 তাহলে যাও তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা শুরু করে গেছে তোমরা তার বাকি কাজ শেষ করো।
33 “সাপ, বিষধর সাপের বংশধর! কি করে তোমরা ঈশ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবে? তোমরা দোষী প্রমাণিত হবে ও নরকে যাবে। 34 তাই আমি তোমাদের বলছি, আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, জ্ঞানীলোক ও শিক্ষকদের পাঠাচ্ছি। তোমরা তাদের কারো কারোকে হত্যা করবে, আর কাউকে বা ক্রুশে দেবে, কাউকে বা তোমরা সমাজ-গৃহে চাবুক মারবে। এক শহর থেকে অন্য শহরে তোমরা তাদের তাড়া করে ফিরবে।
35 “এইভাবে নির্দোষ হেবলের রক্তপাত থেকে শুরু করে বরখায়ার পুত্র সখরিয়, যাকে তোমরা মন্দিরের পবিত্র স্থান ও যজ্ঞবেদীর মাঝখানে হত্যা করেছিলে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত যত নির্দোষ ব্যক্তির রক্ত মাটিতে ঝরে পড়েছে, সেই সমস্তের দায় তোমাদের ওপরে পড়বে। 36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের ওপর ঐ সবের শাস্তি এসে পড়বে।
জেরুশালেমের লোকদের উদ্দেশ্যে যীশুর সতর্কবাণী
(লূক 13:34-35)
37 “হায় জেরুশালেম, জেরুশালেম! তুমি, তুমিই ভাববাদীদের হত্যা করে থাক, আর তোমার কাছে ঈশ্বর যাদের পাঠান তাদের পাথর মেরে থাক। মুরগী যেমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে জড়ো করে, তেমনি আমি তোমার লোকদের কতবার আমার কাছে জড়ো করতে চেয়েছি, কিন্তু তোমরা রাজী হও নি। 38 এখন তোমাদের মন্দির পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকবে। 39 বাস্তবিক, আমি তোমাদের বলছি, যে পর্যন্ত না তোমরা বলবে, ‘ধন্য, তিনি যিনি প্রভুর নামে আসছেন, সে পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না।’”(O)
ভবিষ্যতে মন্দিরের বিনাশ
(মার্ক 13:1-31; লূক 21:5-33)
24 যীশু মন্দির থেকে যখন বাইরে যাচ্ছিলেন, সেই সময় তাঁর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের বড় বড় দালানের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন। 2 এর জবাবে যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা এখন এখানে এসব দেখছ, কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপর থাকবে না, এসবই ভুমিস্যাত হবে।”
3 যীশু যখন জৈতুন পর্বতমালার ওপর বসেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা একান্তে তাঁর কাছে এসে তাঁকে বললেন, “আমাদের বলুন, কখন এসব ঘটবে, আর আপনার আসার এবং এযুগের শেষ পরিণতির সময় জানার চিহ্নই বা কি হবে?”
4 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “দেখো, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়। 5 আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ অনেকে আমার নামে আসবে আর তারা বলবে, ‘আমি খ্রীষ্ট।’ আর তারা অনেক লোককে ঠকাবে। 6 তোমরা নানা যুদ্ধের কথা শুনবে এবং তোমাদের কানে যুদ্ধের গুজব আসেব। কিন্তু দেখো, তোমরা ভয় পেও না, কারণ ঐ সব ঘটনা অবশ্যই ঘটবে কিন্তু তখনও শেষ নয়। 7 হ্যাঁ, এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে; আর এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যাবে। সর্বত্র দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে। 8 কিন্তু এসব কেবল যন্ত্রণার আরম্ভ মাত্র।
9 “সেই সময় শাস্তি দেবার জন্য তারা তোমাদের ধরিয়ে দেবে ও হত্যা করবে। আমার শিষ্য হয়েছ বলে জগতের সকল জাতির লোকেরা তোমাদের ঘৃণা করবে। 10 সেই সময় অনেক লোক বিশ্বাস থেকে সরে যাবে। তারা একে অপরকে শাসনকর্তাদের হাতে ধরিয়ে দেবে আর তারা পরস্পরকে ঘৃণা করবে। 11 অনেক ভণ্ড ভাববাদীর আবির্ভাব হবে, যাঁরা বহু লোককে ঠকাবে। 12 অধর্ম বেড়ে যাওয়ার ফলে অধিকাংশ লোকদের মধ্য থেকে ভালবাসা কমে যাবে। 13 কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে নিজেকে স্থির রাখবে, সে রক্ষা পাবে। 14 আর রাজ্যের (স্বর্গ) এই সুসমাচার জগতের সর্বত্র প্রচার করা হবে। সমস্ত জাতির কাছে তা সাক্ষ্যরূপে প্রচারিত হবে, আর তারপরই উপস্থিত হবে সেই সময়।
15 “তোমরা তখন দেখবে যে, ভাববাদী দানিয়েলের মধ্য দিয়ে যে ‘সর্বনাশা ঘৃণার বস্তুর’[f] কথা বলা হয়েছিল তা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে।” (যে একথা পড়ছে সে বুঝুক এর অর্থ কি।) 16 “সেই সময় যারা যিহূদিয়াতে থাকবে, তারা পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাক্। 17 যে ছাদে থাকবে, সে যেন ঘর থেকে তার জিনিস নেবার জন্য নীচে না নামে। 18 ক্ষেতের মধ্যে যে কাজ করবে, সে তার জামা নেবার জন্য ফিরে না আসুক।
19 “হায়! সেই মহিলারা, যারা সেই দিনগুলিতে গর্ভবতী থাকবে, বা যাদের কোলে থাকবে দুধের শিশু। 20 তাই প্রার্থনা কর যেন শীতকালে বা বিশ্রামবারে তোমাদের পালাতে না হয়। 21 সেই দিনগুলিতে এমন মহাকষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই সময় পর্যন্ত আর কখনও হয় নি এবং হবে ও না।
22 “আরো বলছি, সেই দিনগুলির সংখ্যা ঈশ্বর যদি কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই অবশিষ্ট থাকত না। কিন্তু তাঁর মনোনীত লোকদের জন্য তিনি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে রেখেছেন।
23 “সেই সময় কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, মশীহ (খ্রীষ্ট)’ এখানে, অথবা ‘দেখ, তিনি ওখানে,’ তাহলে সে কথায় বিশ্বাস করো না। 24 আমি একথা বলছি, কারণ অনেক ভণ্ড খ্রীষ্ট ও ভণ্ড ভাববাদীর উদয় হবে। তারা মহা আশ্চর্য কাজ করবে ও চিহ্ন দেখাবে, যেন লোকদের ঠকাতে পারে। যদি সম্ভব হয়, এমনকি ঈশ্বরের মনোনীত লোকদেরও ঠকাবে। 25 দেখ, আমি আগে থেকেই তোমাদের এসব কথা বলে রাখলাম।
26 “তাই তারা যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট প্রান্তরে আছেন!’ তবে তোমরা সেখানে যেও না, অথবা যদি বলে দেখ, ‘তিনি ভেতরের ঘরে লুকিয়ে আছেন,’ তাদের কথায় বিশ্বাস করো না। 27 আকাশে বিদ্যুত যেমন পূর্ব দিকে দেখা দিয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত চমকে দেয়, তেমনি করেই মানবপুত্রের আবির্ভাব হবে। 28 যেখানে শব, সেখানেই শকুন এসে জড় হবে।
29 “মহাক্লেশের সেই দিনগুলির পরই,
‘সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে,
চাঁদ আর আলো দেবে না।
তারাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়বে
আর আকাশমণ্ডলে মহা আলোড়নের সৃষ্টি হবে।’[g]
30 “সেই সময় আকাশে মানবপুত্রের চিহ্ন দেখা দেবে। তখন পৃথিবীর সকল গোষ্ঠী হা-হুতাশ করবে; আর তারা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রম ও মহিমামণ্ডিত হয়ে আকাশের মেঘে করে আসতে দেখবে। 31 খুব জোরে তূরীধ্বনির সঙ্গে তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠাবেন। তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত, চার দিক থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের জড়ো করবেন।
32 “ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা নাও, তার কচি ডালে পাতা এলে জানা যায় গ্রীষ্মকাল কাছে এসে গেছে। 33 ঠিক সেই রকম, যখন তোমরা দেখবে এসব ঘটছে, বুঝবে মানবপুত্রের পুনরুত্থানের সময় এসে গেছে, তা দরজার গোড়ায়় এসে পড়েছে। 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এসব ঘটছে এই যুগের লোকদের শেষ হবে না। 35 আকাশ ও সমগ্র পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু আমার কোন কথা বিলুপ্ত হবে না।
উপযুক্ত সময়ের কথা কেবল ঈশ্বরের জানা
(মার্ক 13:32-37; লূক 17:26-30, 34-36)
36 “সেই দিন ও মুহূর্ত্তের কথা কেউ জানে না, এমন কি স্বর্গদূতরা অথবা পুত্র নিজেও তা জানেন না, কেবলমাত্র পিতা (ঈশ্বর) তা জানেন।
37 “নোহের সময় যেমন হয়েছিল, মানবপুত্রের আগমনের সময় সেইরকম হবে। 38 নোহের সময়ে বন্যা আসার আগে, যে পর্যন্ত না নোহ সেই জাহাজে ঢুকলেন, লোকেরা সমানে ভোজন পান করেছে, বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়েছে। 39 যে পর্যন্ত না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, সে পর্যন্ত তারা কিছুই বুঝতে পারে নি যে কি ঘটতে যাচ্ছে।
“মানবপুত্রের আগমনও ঠিক সেইরকম ভাবেই হবে। 40 সেই সময় দুজন লোক মাঠে কাজ করবে। তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্য জন পড়ে থাকবে। 41 দুজন স্ত্রীলোক যাঁতা পিষবে, তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, আর অন্যজন পড়ে থাকবে।
42 “তাই তোমরা সজাগ থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন দিন আসবেন, তা তোমরা জানো না। 43 তবে একথা মনে রেখো, যদি গৃহস্থ জানত রাত্রে কোন সময় চোর আসবে, তবে সে জেগে থাকত। সে চোরকে নিজের ঘরের সিঁধ কাটতে দিত না। 44 তাই তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ তোমরা যখন তাঁর আগমনের বিষয়ে ভাববেও না, মানবপুত্র সেই সময়ই আসবেন।
উপযুক্ত দাস ও দুষ্ট দাস
(লূক 12:41-48)
45 “সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস তাহলে কে, যার ওপর তার প্রভু তাঁর বাড়ির অন্যান্য দাসদের ঠিক সময়ে খাবার দেবার দায়িত্ব দিয়েছেন? 46 সেই দাস ধন্য যার মনিব ফিরে এসে তাকে তার কর্তব্য করতে দেখবেন। 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি সেই দাসকেই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন।
48 “কিন্তু ধর, সেই দাস যদি দুষ্ট হয়, আর মনে মনে বলে, আমার মনিবের ফিরে আসতে অনেক দেরী আছে। 49 তাই সে তার সঙ্গী দাসদের মারধর করে এবং মাতালদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতে শুরু করে। 50 তাহলে যে দিন ও যে সময়ের কথা সেই দাস ভাবতেও পারবে না বা জানবেও না, সেই দিন ও সেই মুহূর্ত্তেই তার মনিব এসে হাজির হবেন। 51 তখন তার মনিব তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন, ভণ্ডদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন-যেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘসে।
দশজন কনের দৃষ্টান্তমূলক গল্প
25 “স্বর্গরাজ্য কেমন হবে, তা দশজন কনের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যারা তাদের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বার হল। 2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ আর অন্য পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী। 3 সেই নির্বোধ কনেরা তাদের বাতি নিল বটে কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না। 4 অপরদিকে বুদ্ধিমতী কনেরা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল। 5 বর আসতে দেরী হওয়াতে তারা সকলেই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল।
6 “কিন্তু মাঝরাতে চিৎকার শোনা গেল, ‘দেখ, বর আসছে! তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও।’
7 “সেই কনেরা তখন উঠে তাদের প্রদীপ ঠিক করল। 8 কিন্তু নির্বোধ কনেরা বুদ্ধিমতী কনেদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু তেল দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে।’
9 “এর উত্তরে সেই বুদ্ধিমতী কনেরা বলল, ‘না। তেল যা আছে তাতে হয়তো আমাদের ও তোমাদের কুলোবে না, তোমরা বরং যারা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে নিজেদের জন্য তেল কিনে আনো।’
10 “তারা যখন তেল কেনার জন্য বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে উপস্থিত হল, তখন যে কনেরা প্রস্তুত ছিল তারা বরের সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল। তারপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল।
11 “শেষে অন্য কনেরা এসে বলল, ‘শুনছেন, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন।’
12 “কিন্তু এর উত্তরে বর বলল, ‘সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।’
13 “তাই তোমরা সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সেই দিন বা মুহূর্ত্তের কথা জান না, কখন মানবপুত্র ফিরে আসবেন।
তিনজন দাসের কাহিনী
(লূক 19:11-27)
14 “স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো, যিনি বিদেশে যাবার আগে চাকরদের ডেকে সম্পত্তির ভার তাদের হাতে দিয়ে গেলেন। 15 তিনি একজনকে পাঁচ থলি মোহর, আর একজনকে দু থলি মোহর এবং আর একজনকে এক থলি মোহর দিলেন। যার যেমন ক্ষমতা সেই অনুসারে দিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেলেন। 16 যে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা খাটাতে শুরু করল, আর তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর লাভ করল। 17 যে লোক দু’থলি মোহর পেয়েছিল সেও সেই টাকা খাটিয়ে আরো দু’থলি মোহর রোজগার করল। 18 কিন্তু যে এক থলি মোহর পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মনিবের টাকা সেই গর্তে পুঁতে রাখল।
19 “অনেক দিন পর সেই চাকরদের মনিব ফিরে এসে তাদের কাছে হিসাব চাইলেন। 20 যে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে আরো পাঁচ থলি মোহর এনে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমাকে পাঁচ থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর রোজগার করেছি।’
21 “তার মনিব তখন তাকে বললেন, ‘বেশ, তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস। তুমি এই সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত থাকাতে আমি তোমার হাতে অনেক বিষয়ের ভার দেব। এস, তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও।’
22 “এরপর যে দু থলি মোহর পেয়েছিল, সেও তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমায় দু থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো দু থলি মোহর রোজগার করেছি।’
23 “তার মনিব তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস। তুমি সামান্য বিষয়ের উপর বিশ্বস্ত হলে, তাই আমি আরো অনেক কিছুর ভার তোমার ওপর দেব। এস, তুমি তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও।’
24 “এরপর যে লোক এক থলি মোহর পেয়েছিল সে তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর আমি জানি আপনি বড় কড়া লোক। আপনি যেখানে বীজ বোনেন নি সেখানে কাটেন; আর যেখানে কোন বীজ ছড়ান নি সেখান থেকে শস্য সংগ্রহ করেন: 25 তাই আমি ভয়ে আপনার দেওয়া মোহরের থলি মাটিতে পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিলাম। আপনার যা ছিল তা নিন।’
26 “এর উত্তরে তার মনিব তাকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে আমি যেখানে বুনি না সেখানেই কাটি; আর তুমি এও জান যেখানে আমি বীজ ছড়াই না সেখান থেকেই সংগ্রহ করি। 27 তাই তোমার উচিত ছিল মহাজনদের কাছে আমার টাকা জমা রাখা, তাহলে আমি এসে আমার টাকার সঙ্গে কিছু সুদও পেতাম।’
28 “তাই তোমরা এর কাছ থেকে, ‘ঐ মোহর নিয়ে যার দশ থলি মোহর আছে তাকে দাও। 29 হ্যাঁ, যার আছে তাকে আরো দেওয়া হবে, তাতে তার প্রচুর হবে। কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছে থেকে নিয়ে নেওয়া হবে।’ 30 তোমরা ঐ অকর্মন্য দাসকে অন্ধকারে বাইরে ফেলে দাও; সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে।
মানবপুত্র সকল লোকের বিচার করবেন
31 “মানবপুত্র যখন নিজ মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তাঁর স্বর্গদূতদেব সঙ্গে নিয়ে এসে মহিমার সিংহাসনে বসবেন, 32 তখন সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জড়ো হবে। রাখাল যেমন ভেড়া ও ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোককে দুভাগে ভাগ করবেন। 33 তিনি নিজের ডানদিকে ভেড়াদের রাখবেন আর বাঁদিকে ছাগলদের রাখবেন।
34 “এরপর রাজা তাঁর ডানদিকের যারা তাদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশীর্বাদ পেয়েছ, তোমরা এস! জগত সৃষ্টির শুরুতেই যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার অধিকার গ্রহণ কর। 35 কারণ আমি ক্ষুধিত ছিলাম, তোমরা আমায় খেতে দিয়েছিলে। আমি পিপাসিত ছিলাম আর তোমরা আমাকে পান করবার জল দিয়েছিলে। আমি অচেনা আগন্তুক রূপে এসেছিলাম আর তোমর আমায় আশ্রয় দিয়েছিলে। 36 যখন আমার পরনে কোন কাপড় ছিল না, তখন তোমরা আমায় পোশাক পরিয়েছিলে। আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার সেবা করেছিলে। আমি কারাগারে ছিলাম, তোমর আমায় দেখতে এসেছিলে।’
37 “এর উত্তরে যারা ভাল তারা বলবে, ‘প্রভু, কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, পিপাসিত দেখে জল পান করতে দিয়েছিলাম? 38 কখনই বা আপনাকে অচেনা আগন্তুক দেখে আতিথেয়তা করেছিলাম অথবা আপনার পরনে কাপড় নেই দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম? 39 আর কখনই বা অসুস্থ বা কারাগারে আছেন দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম?’
40 “এর উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এই তুচ্ছতমদের মধ্যে যখন কোন একজনের প্রতি তোমরা এরূপ করেছিলে, তখন আমারই জন্য তা করেছিলে।’
41 “এরপর রাজা তাঁর বাম দিকের লোকদের বলবেন, ‘ওহে অভিশপ্তরা, তোমরা আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য যে ভয়াবহ অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে গিয়ে পড়। 42 কারণ আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমায় খেতে দাও নি। আমার যখন পিপাসা পেয়েছিল, তখন আমায় জল দাও নি। 43 আমি অচেনা আগন্তুকরূপে এসেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার আতিথেয়তা করনি। আমার পোশাক ছিল না, কিন্তু তোমরা আমায় পোশাক দাও নি। আমি অসুস্থ ছিলাম ও কারাগারে গিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার খোঁজ নাও নি।’
44 “এর উত্তরে তারা তাঁকে বলবে, ‘প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি আগন্তুকরূপে দেখে অথবা কবেই বা আপনার পরনে কাপড় ছিল না, বা আপনি অসুস্থ ছিলেন ও কারাগারে গিয়েছিলেন বলে আমরা আপনার সাহায্য করিনি?’
45 “এ কথার উত্তরে রাজা বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন এই অতি সামান্য যারা তাদের কোন একজনের প্রতি তা করনি, তখন আমারই প্রতি তা কর নি।’
46 “এরপর অধার্মিক লোকেরা যাবে অনন্ত শাস্তি ভোগ করতে, কিন্তু ধার্মিকরা প্রবেশ করবে অনন্ত জীবনে।”
ইহুদী নেতারা যীশুকে হত্যার চক্রান্ত করলেন
(মার্ক 14:1-2; লূক 22:1-2; যোহন 11:45-53)
26 এইসব কথা শেষ করে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 “তোমরা জানো, আর দুদিন পরই নিস্তারপর্ব শুরু হবে, তখন মানবপুত্রকে ক্রুশে দেবার জন্য শত্রুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
Footnotes
- 19:7 দ্রষ্টব্য দ্বি. বি. 24:1
- 19:9 পদ 9 যৌন পাপের দ্বারা বিবাহের প্রতিশ্রুতিকে ভঙ্গ করাই হল ব্যভিচার।
- 21:44 কোন কোন গ্রীক প্রতিলিপিতে পদ 44 নাই।
- 22:24 দ্রষ্টব্য দ্বি. বি. 25:5-6
- 23:14 কোন কোন গ্রীক প্রতিলিপিতে পদ 14 যুক্ত করা হয়েছে: “ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীরা তোমাদের খারাপ সময় আসছে। তোমরা ভণ্ড। তোমরা বিধবাদের বাড়ি কেড়ে নাও। লোকদের দেখানোর জন্য বড় বড় প্রার্থনা কর। তোমাদের আরও কড়া শাস্তি পেতে হবে।” দ্রষ্টব্য মার্ক 12:40; লূক 20:47
- 24:15 সর্বনাশা … বস্তু দ্রষ্টব্য দানি 9:27; 12:11
- 24:29 যিশাইয় 13:10; 34:4-5
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International